মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে নবনির্মিত একটি পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র নৌ ডাকাত দলের সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। সোমবার বিকেল সোয়া ৫টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ৩০-৪০ জনের একটি ডাকাত দল পাঁচটি ট্রলারে করে ক্যাম্পের দিকে আসে। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল নয়ন, পিয়াস ও রিপন। পুলিশ তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে তারা প্রথমে সরে যায়। পরে হেলমেট পরে অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে আবারও ক্যাম্পে হামলা চালায়।
আধা ঘণ্টাব্যাপী চলা এই গোলাগুলিতে ডাকাত দল শতাধিক রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, পুলিশ পাল্টা ১৯ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে ডাকাতেরা ট্রলার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কোনো পুলিশ সদস্য আহত হননি বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ।
স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল দেওয়ান বলেন, "গোলাগুলির শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি পুলিশ ও ডাকাত দলের মধ্যে গোলাগুলি চলছে। এতে আমাদের গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।"
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ডাকাতেরা থানা থেকে লুট করা অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদীতে অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এই বাহিনীর হাতে দুজন নিহত হওয়ার পর পুলিশ স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্য জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প চালু করে। ৪০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে চালু হওয়া এই ক্যাম্পের কারণে ডাকাতদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, "পুলিশ ক্যাম্প চালু হওয়ায় ডাকাতেরা ক্ষুব্ধ। তবে আমরা সাধারণ মানুষকে বলতে চাই, পুলিশ তাদের পক্ষে আছে। কোনো ডাকাত-সন্ত্রাসীকে পুলিশ ভয় পায় না। গুয়াগাছিয়ার সব ডাকাত-সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে এই এলাকাকে অপরাধমুক্ত করা হবে।"