× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সেন্ট মার্টিনে যেতে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম । আপডেটঃ ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। ফাইল ছবি

প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। সেন্ট মার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। ওই মন্ত্রণালয়ের গঠন করা যৌথ কমিটি এসব বিষয় দেখভাল করবে।

গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে ওই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালককে করা হয়েছে সদস্যসচিব।

সদস্য হিসেবে থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের কক্সবাজারের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের কক্সবাজারের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কক্সবাজারের প্রতিনিধি ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজারের প্রতিনিধি।

আদেশের চিঠিতে কমিটির কর্মপরিধি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজে ওঠার আগে পর্যটকদের জাহাজ ছাড়ার জায়গা; অর্থাৎ এন্ট্রি পয়েন্টে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ট্রাভেল পাস নিতে হবে। ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করবে কমিটি। পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজে নিষিদ্ধঘোষিত পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটি কঠোর থাকবে।

পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পৌঁছানোর পর কোন হোটেলে থাকবেন, তা লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি রেজিস্টারে সংরক্ষণ করা হবে। জাহাজ ছাড়ার স্থানে (পয়েন্টে) ও সেন্ট মার্টিনের প্রবেশের স্থানে (এন্ট্রি পয়েন্ট) পর্যটকদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় সার্বিক বিষয় ও যোগাযোগ সমন্বয় করবে। কাজের সুবিধার্থে কমিটি প্রয়োজনে সদস্য বাড়াতে পারবে।


কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গঠিত কমিটির সদস্যরা ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন।


জানতে চাইলে টেকনাফের ইউএনওর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কমিটির আহ্বায়ক আরিফ উল্লাহ নেজামী গণমাধ্যমকে বলেন, আদেশের কপিটি আজ বুধবার পেয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ ও কমিটির অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কখন থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু করা হবে।


আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল বিকেল থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির গোলাগুলি আবার শুরু হয়েছে। আজ বিকেল পর্যন্ত গোলাগুলি চলছে। নাফ নদী দুই দেশের সীমানা ভাগ করেছে। নদীর পূর্ব পাশে রাখাইন রাজ্য আর পশ্চিমে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে ১৭ কিলোমিটারের নাফ নদী অতিক্রম করে তারপর আরও ১৭ কিলোমিটারের বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যেতে হয়। নাফ নদী অতিক্রমের সময় অতীতে ওপার থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে নাফ নদী দিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের বিষয়ে ভাবছে কমিটি। পর্যটকের নিরাপত্তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিকল্প পথে জাহাজ চলাচলের স্থানও খোঁজা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সেন্ট মার্টিন নিয়ে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসমা শাহীন স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে পাঁচটি বিষয় কার্যকরের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে বলা হয়, সেন্ট মার্টিনে নৌযান বা জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিতে হবে। তারপর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ বা নৌযান চলাচলে অনুমতি দিতে পারবেন।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ইনানী সৈকতে নির্মিত জেটি। ঘূর্ণিঝড় দানার সময় বার্জের ধাক্কায় কিছু অংশ ভেঙে যায়। ফাইল ছবি


পরিপত্রে আরও বলা হয়, নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনেই ফিরে আসবেন। রাত যাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিনে গিয়ে রাত যাপন করতে পারবেন। কিন্তু পর্যটকের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি হবে না। তা ছাড়া দ্বীপে রাতের বেলায় আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দদূষণ সৃষ্টি ও বারবিকিউ পার্টি করা যাবে না।

ওই পরিপত্রের পর আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু হয়নি। নভেম্বরে সেন্ট মার্টিনে কোনো পর্যটকের পা পড়েনি। সরকারি এ সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে দ্বিধাবিভক্ত পর্যটন খাতের বিনিয়োগকারীরা।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ খান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিবছর অক্টোবরের শেষে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। গত বছর রাখাইন রাজ্যের গোলাগুলির কারণে নাফ নদী দিয়ে জাহাজ চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়। তখন কয়েকটি নৌযানে ওপার থেকে গুলি ছোড়া হয়। এরপর বিকল্প হিসেবে কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভের ইনানী জেটি দিয়ে কয়েক মাস জাহাজ চলাচল করে। কিন্তু এবার নভেম্বর মাসের শেষ দিকেও জাহাজ চলাচল শুরু না হওয়ায় হতাশ দ্বীপের বাসিন্দারা।

বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, সরকারি বিধিনিষেধের কারণে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারাও জরুরি প্রয়োজনে কাঠের ট্রলার বা স্পিডবোটে টেকনাফ আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। তাঁদেরও টেকনাফে আসা বা যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হচ্ছে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.