গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের আড়াই মাসের মাথায় পদ ছাড়লেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দায়িত্ব পাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার।
চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মইনুউদ্দীন আব্দুল্লাহ, কমিশনার আছিয়া খাতুন ও কমিশনার জহুরুল হক মঙ্গলবার ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মইনুউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, “কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ করেছি। কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।”
“কেন পদত্যাগ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না। পরে কথা বলব।”
এর পরই ফোন কেটে দেন তিনি। বেলা ২টা ১০ মিনিটে পুরো কমিশন অফিস ত্যাগ করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী, একজন কমিশনার রাষ্ট্রপতি বরাবর এক মাসের লিখিত নোটিস দিয়ে পদত্যাগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে মইনুউদ্দীন কমিশন সেই নোটিস দিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এক সময় ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। ২০২১ সালের ৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি তাকে দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন।
দুই কমিশনারের মধ্যে মো. জহুরুল হক একজন সাবেক জেলা জজ, আর আছিয়া খাতুন সরকারের সাবেক সচিব।
পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য তারা দুদকে নিয়োগ পেলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেড় বছর আগেই তাদের বিদায় নিতে হল।
দুদকের চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এবং কমিশনাররা হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকের সমান মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে।
সেই হাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক, নির্বাচন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশনসহ বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তিরা দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হন।
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গত অগাস্ট মাসেই দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছিল।
মঙ্গলবার বিকালে দুদক সংস্কার কমিশনের সঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান, কমিশনার ও কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই তারা পদত্যাগ করলেন।