হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু ঢাকাসহ সারাদেশে। তবে উত্তরাঞ্চলে এর তীব্রতা অনেক বেশি। হাড় কাঁপানো এই শীতের সঙ্গে বেড়েছে ঘন কুয়াশা। আর এতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত নানা রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে কৃষির। আবহাওয়া অফিস বলছে, শীতের মধ্যেই বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। ‘হাড় কাঁপানো’ এমন শীত ঢাকাবাসী দেখেনি অনেক দিন।
শনিবার দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। এ ছাড়া নওগাঁর বদলগাছীতে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি, সৈয়দপুরে ৯, রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৬ এবং পাবনার ঈশ্বরদীতে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি, আর সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দিনাজপুর, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বদলগাছী, সৈয়দপুর, তেঁতুলিয়া, চুয়াডাঙ্গা, কুমারখালী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শৈতপ্রবাহের কবলে রয়েছে আট জেলা। এমন অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকতে পারে। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘অনেক জেলায় শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও প্রচণ্ড শীতে সারাদেশে জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। আরও দিন দুয়েক কুয়াশা থাকবে। এর পর আস্তে আস্তে তাপমাত্রা বাড়বে।’
শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে এলে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। যেমন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ৫ ও সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, তাপমাত্রা বাড়া ও কমার ব্যবধান মাত্র ৫ ডিগ্রি। এ কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই পার্থক্য যখন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আসে, তখনই ঠান্ডা বাড়তে থাকে। আর পার্থক্য ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এলে ঠান্ডা প্রকট থেকে প্রকটতর হয়। যাকে বলে, হাড় কাঁপানো শীত। ঢাকার অবস্থা এখন সে রকমই।’
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারির পুরোটা শীতের অনুভূতি থাকবে। তবে ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে দেশজুড়ে অস্থায়ী দমকা হাওয়া ও ঝোড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। ২০ জানুয়ারির পর আবার মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।’
গ্রামাঞ্চলে তীব্র শীতে কষ্ট পাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ স্বল্পমূল্যে শীতবস্ত্র কিনতে পুরোনো পোশাকের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন।
শীতে কাহিল রংপুরের মানুষ। দিনরাত থাকছে কনকনে ঠান্ডা। রাতভর থাকছে কুয়াশা। দিনেও যান চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।
পঞ্চগড়েও কনকনে শীতে দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষি শ্রমিক, চা শ্রমিক ও দিনমজুররা। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এখানে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, অতিদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জেলায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। সরকার থেকে পাওয়া ৩৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। আরও কম্বলের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার্তা পাঠানো হয়েছে।’
বিষয় : জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তর
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh