জামালপুরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধাওয়ায় আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় তাঁদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ লোহার পাইপ ও লাঠিসোঁটা দেখা যায় | ছবি: সংগৃহীত
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শাহরিয়া ইসলাম ওরফে রাফি (ডানে) এবং ছাত্রলীগের কর্মী নাফিজুর রহমান ওরফে তুষার (বাঁয়ে) | ছবি—সংগৃহীত
জামালপুরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করা দুজন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। তাঁদের একজন জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শাহরিয়া ইসলাম ওরফে রাফি, অন্যজন ছাত্রলীগের কর্মী নাফিজুর রহমান ওরফে তুষার। তাঁর দলীয় পদ-পদবি নেই।
আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে শহরের নতুন হাইস্কুল এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তাঁদের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে দেখা যায়। ওই দুজনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধাওয়ায় আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই দুজনের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করা নাফিজুরের বাড়ি শহরের পাথালিয়া এলাকায়। স্থানীয় লোকজন তাঁদের দুজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
আজ বেলা তিনটার দিকে শহরের বকুলতলা এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ জন্য ওই সড়ক দিয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের যেতে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় শহরের নতুন হাইস্কুল এলাকায় জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। তখন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। এতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ সময় ওই দুই যুবককে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে তাঁদের ধাওয়া করতে দেখা যায়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের বাইপাস এলাকায় জড়ো হন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের মির্জা আজম চত্বরে যায়। সেখানে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখানে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা মির্জা আজম চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে শহরের দিকে রওনা হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেন। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে শহরের দিকে রওনা হন। মিছিলটি শহরের পাঁচরাস্তা মোড় এলাকা দিয়ে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে যান। সেখান থেকে মিছিলটি শহরের বকুলতলা এলাকার দিকে রওনা হয়।
হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার বিষয়ে অভিযুক্ত দুজনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহব্বত কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। সে সময় কাউকে লক্ষ করার সুযোগ ছিল না। অস্ত্রধারী কেউ ছিল না কি না, সেটা নিশ্চিত বলতে পারব না। তবে ছবি থাকলে যাচাই-বাছাই করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে। যদি কারও হাতে অস্ত্র থাকে তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh