× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বগুড়ায় গুলি

বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

০৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫৬ এএম । আপডেটঃ ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫৭ এএম

ছবি | সংগৃহীত

আজও বৃষ্টি। অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে আকাশ থেকে। ভেজা শরীরেই লাখ লাখ শিক্ষার্থী আন্দোলনের মাঠে অবস্থান করছেন। বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় মূল অবস্থান হলেও পুরো শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। পুলিশের গুলি, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেডের তোয়াক্কা না করে দুর্বার গতিতে চলতে থাকে বিক্ষোভ। প্রথমে পুলিশ কিছু জায়গায় আন্দোলনকারীদের বাধা দিলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে শুরু করে। পুলিশের টিয়ারশেল মারার পর উল্টো পুলিশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তাদের হাতে থাকা পানির বোতল, পায়ের জুতা, সেন্ডেল বৃষ্টির মতো নিক্ষেপ শুরু হয় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে। একপর্যায়ে পুলিশ দৌড়ে জেলা স্কুলের ভিতরে ঢুকে পড়ে। পরে শিক্ষার্থীরা টিয়ারশেলে চোখের জ্বালা থেকে বাঁচতে রাস্তায় রাস্তায় কাগজ দিয়ে আগুন জ্বালায়। এ সময় পুরো শহর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। 

আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ তাদের অঙ্গসংগঠনের ১০/১২টি বিল বোর্ড ছিঁড়ে ফেলেন। বিশেষ করে সাতমাথায় অবস্থিত সপ্তপদী মার্কেটের ছাদে বড় আকারের কয়েকটি বিলবোর্ড ছিল সেগুলো টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলেছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও জেলা স্কুলের দেয়াল ঘেঁষে এবং শেরপুর সড়কে আরও কয়েকটি বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলেছেন। এগুলোর বেশির ভাগ ছিল সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-নেত্রেীর ছবি সংবলিত ব্যানার। বিক্ষুদ্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের প্রথমদিকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারপর তাদের আর কেউ থামাতে পারেনি। শুক্রবারও লক্ষাধিক আন্দোলনকারী একইভাবে অবস্থান করছিল। সেদিন পুলিশ কোনো ধরনের বাধা প্রদান করেনি। ফলে আন্দোলনকারীরাও কোনো ভাঙচুর করেননি। শান্তিপূর্ণভাবেই সেদিনের কর্মসূচি শেষ হয়।

এদিকে বগুড়া শহরের বড়গোলা মোড় থেকে শুরু হয়ে সাতমাথা, সাতমাথা থেকে শেরপুর সড়কের মফিজপাগলার মোড়, জেলা স্কুল সড়ক, ফতেহ আলীর দিকে চলে যাওয়া মেরিনা মার্কেট সড়ক অপর পাশের নবাববাড়ী সড়ক জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। পুলিশ ধাওয়া খেয়ে পরে আর গুলি বা টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেনি। পুরো সময় জুড়ে পুলিশ নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছিলেন। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, আর্ম পুলিশকে দেখা গেলেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের চোখে পড়েনি। 

এর আগে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফি নেওয়াজ খান রবিন এবং জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুভাশিষ পোদ্দার লিটনসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে দুপুরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় এক নেতার ছেলে শুক্রবারের আন্দোলনে যোগ দেয়াকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে আন্দোলনকারীদের সাতমাথার দিকে আসার খবর পেয়ে তারা দলীয় কার্যালয় থেকে দ্রুত চলে যায়। 

পুরো সাতমাথা জুড়ে আন্দোলনকারীরা অবস্থান করলেও তারা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে যাননি। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) আন্দোলনকারীদের একটি সাতমাথায় অবস্থান ছিল এবং আরও ১০/১২টি গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে। ছোট খণ্ড দলগুলোর সঙ্গে পরে একাধিক জায়গায় পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

তারা বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন। এ সময় তারা নিহত শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু বিচারসহ একাধিক দাবিতে স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে কোনো যানবাহন চলাচল করছে না।

কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীদের হাতে ‘শিশুর বুকে বুলেট কেন? জবাব চাই, বিচার চাই! একটি ফুলকেও আর হারাতে চাই না’, ‘কোটা দিয়ে করবো কি, শহীদ ভাইরা ফিরবে কি?, Bloody July, ‘আমার ভাই নিখোঁজ কেন?’- লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ডসহ বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা- ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না, এই মুহূর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার, তুমি কে আমি কে সমন্বয়ক সমন্বয়কসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা বগুড়াসহ সারা দেশে যে সকল শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। 

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.