ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখা-২ এর যুগ্মসচিব মো. পারভেজ হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সব নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমতি দেওয়া হলো। ২০২৩ সালের দুটি স্বারক নম্বরের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। যেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্মারক- র-৫১৮/৮৯৪(৩)। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের স্মারক নং-৩৭,০০,০০০০, ০৭৯, ০৮, ০৫১,১০,৪২৬।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ ডিসেম্বর পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাবিতে বর্তমানে ১ হাজার ৪৯০টি শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৩৫টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ১ হাজার ৫৫ জন। তাদের মধ্যে আবার ৫৬ জন শিক্ষক সম্প্রতি অবসরে গেছেন এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষক মারা গেছেন। অন্যদিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর ১ হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি। এছাড়া সাধারণ কর্মচারীর ১ হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে শূন্য ৯০৯টি।
এদিকে, শিক্ষক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নেই রাবিতে। দেশের চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাবিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ হাজার ৩৮৩ জন যার বিপরীতে শিক্ষক সংখ্যা ২ হাজার ৪২১ জন। অন্যদিকে রাবিতে ৩৮ হাজার ২৯১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রায় ঢাবির সমান হলেও শিক্ষক সংখ্যা ১ হাজার ৯৭ জন, যা ঢাবির তুলনায় অর্ধেকেরও কম। বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে প্রতি ৩৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক। তবে এবার নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় কমতে পারে এ অনুপাত।
নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. তরিকুল হাসান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি আমিও শুনেছি তবে এখনো অফিশিয়াল কোনো চিঠি আমি পায়নি। তবে আজকের তারিখে যেহেতু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, হয়তো প্রক্রিয়া মেনে দুএকদিন সময় লাগবে আমাদের কাছে পোঁছাতে। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই, আমাদের কাছে আসলে আপনারাও জানতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরাও বিষয়টি শুনেছি। তবে আমাদের হাতে অফিসিয়ালি এখনও কোনো চিঠি আসেনি। চিঠি আসলে আমরা তা ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেব।
বিষয় : রাবি নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh