ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা শহরে নিজেদের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। তাঁর কয়েকজন বন্ধু বলেন, তিনি ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। আর সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে রায়হানের পক্ষ নিয়ে তাঁর (ফাইরুজ) সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ করেন তিনি।
ঘটনাটি নিয়ে ক্যাম্পাসে এখন প্রতিদিন নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এ অবস্থায় তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) গিয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম নিয়ে খোঁজখবর করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও পাশের শহীদ রফিক ভবনে যৌন হয়রানির অভিযোগ দেওয়ার জন্য দুটি বাক্স রাখা আছে।
তবে আন্দোলনকারী কয়েক শিক্ষার্থীর ভাষ্য, বাক্স দুটি এমনভাবে রাখা, তা খুব একটা চোখে পড়ে না। কমিটির বিষয়ে প্রচার কম। ফলে অনেকে কমিটির কথা জানেন না। তা ছাড়া নানা কারণে ভুক্তভোগীরা কমিটিতে অভিযোগ দিতে আগ্রহী হন না।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ফাইরুজের স্মরণে এক শোকসভায় উপাচার্য সাদেকা হালিম এই বক্স দুটি নতুন করে রং করতে বলেন। বক্সের চাবি তাঁর কাছে জমা দিতে বলেন।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, প্রশাসনের মাধ্যমে বা সরাসরি কোনো অভিযোগে এলে নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করা হয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করেন।
একজন শিক্ষার্থী কীভাবে কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারেন—এমন প্রশ্নে লাইসা আহমদ বলেন, অভিযোগ বক্সে গোপনে অভিযোগ দেওয়া যায়। রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে অভিযোগ দেওয়া যায়। আবার সরাসরি কমিটির কাছেও অভিযোগ করার সুযোগ আছে।
কত দিন পরপর অভিযোগ বাক্স খুলে দেখা হয়—এমন প্রশ্নে লাইসা আহমদ বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা নেই। আমরা প্রায়ই বাক্স খুলে দেখি কোনো অভিযোগ এল কি না।
অভিযোগ পাওয়ার পর কীভাবে তদন্ত শুরু করা হয়, সে বিষয়ে লাইসা আহমদ বলেন, ‘আমরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের বক্তব্য শুনি। অন্য যাঁরা সংশ্লিষ্ট থাকেন, তাঁদের সাক্ষাৎকার নিই। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব ঘটনার ভিডিও রেকর্ড রাখা হয়। আমরা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থার বিষয়ে সুপারিশ করি।’
কমিটি থাকার বিষয়ে প্রচার চালানোর কোনো উদ্যোগ আছে কি না—এমন প্রশ্নে লাইসা আহমদ বলেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থাকায় প্রত্যেকেই বিষয়টি জানে। এরপরও তাঁরা বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন, র্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় কেউ যেন কেউ মুখ বুজে না থাকে, অভিযোগ জানায়, এই বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করি।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh