সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। নির্বাচনে নানা অসঙ্গতি এবং ভোটগ্রহণে কারচুপির অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। এই প্যানেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে 'ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের' অভিযোগও এনেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী অভিযোগ করেন, ভোট দেওয়ার সময় ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে আঙুলে দেওয়া কালি সহজে মুছে যাচ্ছিল। এমনকি একটি ব্যালট পেপার ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখা যায়, যার কারণে এই হলে দুই ঘণ্টা নির্বাচন বন্ধ ছিল।
এছাড়াও, তাদের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসানকে একটি হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাজউদ্দীন আহমদ হলে ভোটার তালিকায় ছবি না থাকায় ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল এবং সব হলেই ছাত্রদলের প্যানেলের এজেন্টদের থাকতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়।
জামায়াত নেতার প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যালট ছাপানোর অভিযোগ
জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসাইন অভিযোগ করেন, জামায়াত নেতার প্রতিষ্ঠান থেকে ছাপানো ব্যালটে ভোটগ্রহণ চলছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "জামায়াত নেতার কোম্পানি থেকে ছাপানো ব্যালটের শতকরা ১০ থেকে ২০ শতাংশ ছাত্রশিবিরকে দেওয়া হয়েছে কিনা?"
তিনি আরও দাবি করেন, "আমাদের প্রার্থী ও এজেন্টদের বাধা দিয়ে ওই জাল ব্যালট দিয়ে ভোট কাস্ট করা হচ্ছে কিনা?"
ভোট কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য জামায়াত নেতার কোম্পানিকেই সিসিটিভির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল।
নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে তিন শিক্ষকের সরে আসার ঘোষণা
ভোট শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত তিন শিক্ষক। তাঁরা হলেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খান। ভোট দেওয়ার পর হাতে কালির দাগ না থাকা এবং অতিরিক্ত ব্যালট প্রিন্ট করার মতো অভিযোগ তুলে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নেন।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি
জাকসু নির্বাচনে ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না, যা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ হয়। এ বিষয়ে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম নাজিম বলেন, "বিশ্বস্ত কাউকে পাওয়া না গেলে আমার মতো বিপত্তিতে পড়তে হবে। প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবেই এমনটা হয়েছে।"
তবে আরেক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আইয়ুব আলী তাঁর বন্ধুর সহায়তায় ভোট দিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন।
ভোটকেন্দ্রের নানা অসঙ্গতি
ভোট চলাকালে একাধিক কেন্দ্রে নানা ধরনের অসঙ্গতির খবর পাওয়া যায়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালি না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে 'জাল ভোটের' গুঞ্জনকে কেন্দ্র করে হট্টগোল হয় এবং প্রায় ৪৫ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ভোটার তালিকায় ছবি না থাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ২৩ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।
অন্যান্য খবর:
বিষয় : জাকসু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh