কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ ২৪ ঘণ্টার বদলে শুধু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
২০১৭ সালের ১ অগাস্ট দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বেনাপোল ও পেট্রাপোলের মধ্যে শুরু হয় ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য পরিসেবা। সপ্তাহে ছয় দিন ২৪ ঘণ্টার জন্য খোলা ছিল বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দর।
কিন্তু বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে সন্ধ্যার পর আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই এ ধরনের পদক্ষেপে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন বাংলাদেশি আমদানিকারকরা। তাদের আশঙ্কা, এতে করে তাদের আবারও পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যজটের কবলে পড়তে হবে।
তবে কী কারণে পেট্রাপোল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানতে চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, সন্ধ্যার পর বাণিজ্য সেবা বন্ধের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে।
সোমবার বিকালে তিনি বলেন, “সেখানকার ম্যানেজার বলেছেন, সরকারিভাবে এটা বন্ধ করা হয়নি। তিনি বন্দর ব্যবহারকারী সংশিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পরে বিস্তারিত জানাতে চেয়েছেন।”
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ নেতা মশিয়ার রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার থেকে রাতে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে আসেনি। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকছে।
তবে, দিনের বেলা বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকছে। এতে ব্যবসায়ে লোকসান ও আমদানি কমে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি পণ্যজটের আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালের ১ অগাস্ট থেকে বেনাপোল ও পেট্রাপোলের মধ্যে ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য পরিষেবা শুরু হয়। তার আগে অবশ্য সকাল-সন্ধ্যা বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালিত হত।
“২৪ ঘণ্টা পণ্য পরিবহনের সুযোগে রাত-দিন, এমনকি জরুরি মুহূর্তে শুক্রবারও আমদানি-রপ্তানি ও পণ্য খালাস কার্যক্রম চলত। এতে দৈনিক আমদানির পরিমাণ ৩০০ ট্রাক থেকে বেড়ে ৫০০ ট্রাক পর্যন্ত হয়। বছরে রাজস্ব আয় তিন হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।”
তিনি বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ করে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য, শিল্প-কলকারখানার কাঁচামালসহ বিভিন্ন জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ছে দুই পারের বন্দরে।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, এ নিয়ম চলতে থাকলে পচনশীল খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য নিয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। হয়তো এ জাতীয় পণ্য আমদানি অনেকাংশে কমে যাবে। সরকার এ খাতের রাজস্ব হারাবে। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়বে বলে মনে করি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh