× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

পণ্যের শুল্কায়ন

আরও বাড়ল ডলারের দাম , সরকারের বাড়বে আয়

ন্যাশনাল ট্রিবিউন প্রতিবেদক

০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৬ এএম । আপডেটঃ ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৩ এএম

ডলার—ফাইল ছবি: বিবিসি

বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের দাম বাড়িয়েছে কাস্টমস। এতে সব ধরনের পণ্য থেকে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে। বিপরীতে পণ্য আমদানির ব্যয় বেড়েছে, যা সাধারণ মানুষের খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে। 

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বাজারের সঙ্গে মিল রেখে নিয়মিত ডলারের দাম সমন্বয় করে। অনুসরণ করা হয় সোনালী ব্যাংকের দর। গত ২৩ জুন থেকে শুল্ক–কর আরোপের জন্য ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা ৯৪ পয়সা। মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত তা ছিল ১১০ টাকা। মাত্র ৪২ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় ডলারের দাম বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৮ টাকা। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যভেদে কেজিতে শুল্ক–কর ১ থেকে ১৭ টাকা বেড়েছে। 

আমদানি হওয়া চালানের নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মে মাসে প্রতি কেজি সয়াবিন তেল আমদানিতে শুল্ক–কর ছিল ১৭ টাকা। ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির পর একটি চালান খালাস হয়েছে। তাতে প্রতি কেজিতে শুল্ক–কর দিতে হয়েছে ১৯ টাকা। মানে হলো প্রতি কেজি সয়াবিন তেলে বাড়তি শুল্ক–কর দিতে হচ্ছে ২ টাকা। পাম তেলে বাড়তি দিতে হচ্ছে ১ টাকা। 

আমদানিতে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোজ্যতেলের মূল্য সমন্বয় করার জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) চিঠি দিয়েছে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। গত ২৩ জুন দেওয়া এই চিঠিতে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির কথাও বলা হয়। 

ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার সাংবাদিকদের বলেন, সয়াবিনে শুল্ক–কর দুই টাকা বাড়লেও আমদানি মূল্য বেড়েছে কেজিতে প্রায় সাড়ে পাঁচ টাকা। সব মিলিয়ে খরচ বেড়েছে সাড়ে সাত টাকা। আনুষঙ্গিক খরচও বেড়েছে। এ জন্যই মূল সমন্বয় করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

চিনির আমদানির কয়েকটি চালান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে প্রতি টন ৬৩০ ডলার দরে আনা চিনিতে শুল্ক–কর ছিল কেজিতে ৪০ টাকা। তখন ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ১১০ টাকা। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পর এখন একই দরে আনা চিনিতে শুল্ক–কর দিতে হয়েছে ৪২ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনিতে শুল্ক–কর বেড়েছে দুই টাকা।

বিভিন্ন পণ্যের ওপর নির্দিষ্ট হারে শুল্ক–কর থাকে। ডলারের নির্দিষ্ট দাম ধরে সেই শুল্ক–কর আরোপ করা হয়। যখন ডলারের দাম বাড়ে, তখন আগের শুল্ক–কর হার আরোপ করা হলেও সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে যায়। 

গুঁড়া দুধে এখন করভার ৩৭ শতাংশ। পণ্যটি আমদানিতে গত মে মাসে প্রতি কেজিতে করভার ছিল ১৩৬ টাকা। তখন ডলারের দর ছিল ১১০ টাকা। ডলারের দাম ১১৭ টাকা ৯৪ পয়সা নির্ধারণ করার পর এখন পর্যন্ত কোনো চালান খালাস হয়নি। তবে দাম আগের মতো থাকলেও ডলারের নতুন দামের কারণে নতুন চালানে শুল্ক–কর দিতে হবে ১৫২ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে শুল্ক–কর বাড়বে ১৬ টাকার মতো। 

আমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের মধ্যে গম, ডালজাতীয় পণ্যে শুল্ক–কর নেই। তবে মসলাসহ নানা নিত্যপণ্যে করভার রয়েছে। মসলা আমদানিতে করভার ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত মে মাসে প্রতি কেজি জিরার শুল্ক–কর ছিল ২৩০ টাকা। এখন জিরায় শুল্ক–কর দিতে হচ্ছে কেজিতে ২৪৭ টাকা। বেড়েছে ১৭ টাকা। 

২০২২ সালের মার্চে ডলারের দর ছিল ৮৬ টাকা। এখন হয়েছে ১১৭ টাকা ৯৪ পয়সা। অর্থাৎ দুই বছর তিন মাসের ব্যবধানে ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ৩২ টাকা। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে আমদানি খরচ। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের উচিত শুল্কছাড় দেওয়া অথবা ডলারের দাম কমিয়ে ধরা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মানুষ কষ্টে আছে। এখন নতুন করে ডলারের দাম বাড়ানোর কারণে শুল্ক–করও বাড়ছে। এ জন্য কিছু কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক–করের হার সমন্বয় করা উচিত। তাতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য সরবরাহকারীরা অজুহাত পাবেন না। মানুষও কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারবে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.