খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে আগের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। মাত্র তিন মাসে ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা বেড়ে মার্চ শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ঠেকেছে এক লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকায়। ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা মোট ঋণের যা ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। একবছর আগের তুলনায় যা ৫০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা বেশি।
আইএমএফের শর্ত মেনে খেলাপি ঋণ কমানোর পরিবর্তে এভাবে বাড়ল। মূলত আইএমএফের চাপে কৌশলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ উঠে যাচ্ছে। আবার তদারতি শিথিলতার কারণে জালিয়াতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণ আর ফেরত আসছে না। ফলে খেলাপি ঋণ নিয়ে চরম সঙ্কটে তৈরি হয়েছে বলে জানান ব্যাংকাররা।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের জন্য বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে সংস্থাটি। তাদের শর্ত মেনে ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকের ১০ শতাংশের নিচে নামানোর কথা। তবে খেলাপি ঋণ কম দেখাতে এখনকার মতো নীতি সহায়তা রাখা যাবে না। এটি কার্যকর হলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে ব্যাংক খাতের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ঋণ স্থিতি ছিল ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। সেখানে খেলাপি ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর মানে প্রথম তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। যেখানে ঋণ বেড়েছে মাত্র ২৩ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোর ৩ লাখ ১২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা ঋণের ২৭ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। গত ডিসেম্বরে ছিল ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ১২ লাখ ২১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন মাস আগে যা ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ ছিল। বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৬৬ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। আর বিশেষায়িত ব্যাংকের ৪০ হাজার ৩২ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তিন মাস আগে যা ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল।