পেঁয়াজ ফাইল ছবি
বাজারে দেশি পেঁয়াজ উঠা শুরু হয়েছে তবুও দাম কমার কথা নেই । প্রতি কেজি এখন ১০০ টাকার আশপাশে। অন্যান্য বছর মৌসুমের এই সময়ে দাম বেশ নেমে এলেও এবার দাম কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সরকার অবশ্য ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়ে রেখেছে। কিন্তু প্রতিবেশী ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখায় এবং বিকল্প বাজার থেকেও পেঁয়াজ আমদানিতে কোনো গতি নেই। যে কারণে দেশের বাজারে নতুন পেঁয়াজের দাম কমছে না।
গত বুধবার রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যে পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল, তা ছিল আকারে একটু বড়। প্রায় ১০ দিন ধরে এই দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ নেই বললেই চলে।
মগবাজারের আজমেরী স্টোরের স্বত্বাধিকারী এনামুর রহমান বলেন, পেঁয়াজ পাইকারিতে ৯০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। কাঁচা পেঁয়াজ কেনার পর সেটা বাছাই করলে কিছু বাদ যায়। তাতে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি না করলে লাভ থাকে না। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম সেভাবে কমছে না।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে বাজারে অল্প কয়েকটি দোকানে আমদানি করা পেঁয়াজ মিলছে। পরিমাণেও তা একেবারে কম। আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে কম হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম কমছে না বলে মনে করেন ব্যবসায়ীদের অনেকে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বিকল্প বাজার থেকে আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। কিছু আমদানিকারক আইপি নিচ্ছেনও। কিন্তু আমদানিতে তাঁদের আগ্রহ কম। গতকাল দেশে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। এমনকি চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ এসেছে যত্সামান্য। সরকারি সংস্থা ডিএইর তথ্যমতে, গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে এখন পর্যন্ত আমদানিকারকেরা ২১ লাখ ২২ হাজার ৭৯৮ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিলেও এনেছেন মাত্র ৭ লাখ ১৬ হাজার ৩১৯ টন।
আমদানি কমা প্রসঙ্গে পুরান ঢাকার আমদানিকারক মো. কামরুজ্জামান বলেন, যে মৌসুমে দেশে যে ফসল হয়, তখন সেটি আমদানি করতে হলে অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হয়। অন্যথায় লোকসানের শঙ্কা থাকে।
বাজারে এখন আগাম বা মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এটি মাস দেড়েক আগে বাজারে আসতে শুরু করে। এই জাতের পেঁয়াজের বেশির ভাগই মাঠ থেকে ইতিমধ্যে তোলা হয়ে গেছে। ফলে সরবরাহ কমছে, বাড়ছে দাম। আশার বিষয় হচ্ছে, মাসখানেকের মধ্যেই প্রধান জাত হালিকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করবে। তখন এটির দাম কমে আসবে বলে মনে করেন কৃষক ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা।
গত ডিসেম্বরের শুরুতে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর দেশে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। বাজারে দেশি মুড়িকাটা জাতের নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার পর শুরুতে তা দেড় শ টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। জানুয়ারির মাঝামাঝিতে দাম ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় নেমে এলেও দাম এখন আবার বাড়ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh