দেশের অর্থনীতির মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেই বিপুল মুনাফা অর্জন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়ে এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় মূল্য থেকে রেকর্ড পরিমাণ ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বেশি।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে গত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে গভর্নর আহসান এইচ মনুসরের সভাপতিত্বে পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়ের উৎস: ঋণ ও রিজার্ভের সুদ
জানা গেছে, এই বিপুল মুনাফার মূল উৎস হলো সরকারের ঋণ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ধার দেওয়া টাকা থেকে পাওয়া সুদ। অর্থনীতিতে মন্দা ও রাজস্ব আয় কম হওয়ায় সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। একই সময়ে ব্যাংকগুলোও আগের চেয়ে বেশি ধার করেছে। ফলে সুদ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আয় বেড়েছে।
এছাড়াও, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিনিয়োগ থেকেও ভালো মুনাফা এসেছে। এসব উৎস থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিপুল মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
সরকারের কোষাগারে জমা
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, অর্জিত মুনাফার ৮ হাজার কোটি টাকা এরই মধ্যে সরকারের হিসাবে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার নিরীক্ষক ও গভর্নরের স্বাক্ষরের পর বাকি টাকাও সরকারের কোষাগারে জমা করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, "রিজার্ভের বিনিয়োগের চেয়ে স্থানীয় মুদ্রা থেকে বেশি মুনাফা হয়েছে। মুনাফার একটি অংশ আগেই সরকারের হিসাবে জমা দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বাকি অর্থ জমা করা হবে।"
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, অর্থনীতি চাঙা থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফা সাধারণত কম হয়, আর মন্দা থাকলে মুনাফা বাড়ে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা যায়।