× প্রচ্ছদ জাতীয় রাজনীতি অর্থনীতি সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন ফিচার প্রবাস সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সংঘাত বাড়লে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে বেশি: মুডিস

ন্যাশনাল ট্রিবিউন ডেস্ক

১০ মে ২০২৫, ১২:০৫ পিএম । আপডেটঃ ১০ মে ২০২৫, ১২:০৬ পিএম

মুডিস। ছবিঃ এএফপি

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস সম্প্রতি বলেছে, যে সময় পাকিস্তানের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল, সেই সময় ভারতের সঙ্গে সামরিক সংঘাতের প্রভাবে দেশটির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদিও তারা মনে করে, সংঘাত বাড়লে ভারত অতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

এক নোটে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থাটি বলেছে, ভারত-পাকিস্তান দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে এবং সরকারের চলমান আর্থিক খাত সংস্কারের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। ফলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পাকিস্তান সরকার কয়েক বছর ধরে যে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তা ব্যাহত হবে। খবর দ্য ডনের

মুডিস বলেছে, পাকিস্তানের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলোর উন্নতি হচ্ছে। প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে বাড়ছে; মূল্যস্ফীতির চাপ কমছে ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে দেশটির যে ঋণ কর্মসূচি চলছে, তার কারণে এসব উন্নতি হয়েছে বলে মনে করে মুডিস। এদিকে এই যুদ্ধের আবহের মধ্যে চলমান ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় পাকিস্তানের জন্য নগদ ১০০ কোটি ডলার ছাড় করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

কিন্তু মুডিস মনে করে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা দীর্ঘায়িত হলে বা আরও বাড়লে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন যাবে। ফলে দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে আবার চাপ পড়বে। গত কয়েক মাসে দেশটির রিজার্ভ বাড়লেও এখনো তা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেই।

এদিকে ১৯৬০-এর দশকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যে সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি হয়েছিল, ভারত তা স্থগিত করায় পাকিস্তানে পানিপ্রবাহ অনেকটাই কমে যাবে। ফলে দেশটির ফসল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মুডিস।

এর বিপরীতে ভারতের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করে মুডিস। সংঘাত দীর্ঘায়িত হলেও যেটা হবে, সেটা হলো, ভারতের সরকারি বিনিয়োগ ও অভ্যন্তরীণ ভোগের কল্যাণে উচ্চ হারেই প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ভারত।

নোটে মুডিস বলেছে, পাকিস্তানের এই স্থানীয় উত্তেজনা দীর্ঘায়ত হলেও ভারতের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না বলেই তারা মনে করে। কারণ, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক তেমন একটা নেই। ২০২৪ সালে ভারত যত রপ্তানি করেছে, তার মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ গেছে পাকিস্তানে।

যদিও সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়বে; এতে ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধিতে আরেকটু বেশি চাপ পড়তে পারে। স্বাভাবিকভাবেই তখন ভারতের প্রবৃদ্ধিতেও প্রভাব পড়বে বলে মনে করে মুডিস।

তবে ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষণ থেকে মুডিস মনে করে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এই উত্তেজনা থেকে সীমিত পরিসরে সামরিক সংঘাত হয়েছে। তাদের পূর্বাভাস, স্বাধীনতার পর থেকেই মাঝেমধ্যে দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বেড়েছে, তা থাকবে, কিন্তু সরাসরি বা বৃহৎ পরিসরে সামরিক সংঘাতে মোড় নেবে না।

২০২৪ সালে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৩ সালে হয়েছিল আরও কম। এডিবির পূর্বাভাস, ২০২৫ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ শতাংশ। বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, এই যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে জটিলতা বেড়েছে। শঙ্কা আছে, পাকিস্তান আবারও অর্থনৈতিকভাবে বিপদের মুখে পড়তে পারে।

এডিবি ধারণা করেছিল, চলতি বছর পাকিস্তানের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। সরকার যেসব সংস্কারমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তার হাত ধরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। ফলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে অনেকটাই, বিদেশি মুদ্রার বাজারেও আসবে স্থিতিশীলতা।

কিন্তু সেই সমীকরণ অনেকটাই বদলে গেছে। সামরিক সংঘাত শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানি মুদ্রার দরপতন হয়েছে। ভারতের মুদ্রা রুপিরও দরপতন হয়েছে। দেশটির শেয়ারবাজারে রীতিমতো রক্তক্ষরণ ঘটে গেছে। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পক্ষে নতুন অর্থায়ন পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

National Tribune

সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন

যোগাযোগ: +880244809006

ই-মেইল: [email protected]

ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 National Tribune All Rights Reserved.