ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৯তম আসরে রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে বাণিজ্যমেলায় ঘুরতে এসে শিশু পার্ক দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়।
বৃহস্পতিবার পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শিশুদের কলরবে মেতে উঠেছিল মেলা প্রাঙ্গণ। ৫ বছরের নাহিয়ান মাহমুদ রাফি মেলায় নিয়ে যাবার জন্য বাবা আক্তার মাহমুদ ডালিমের কাছে বায়না ধরেছিল। ছেলের আবদার পূরণে মেলায় এসেছিলেন তিনি।
ঢাকা খিলক্ষেত থেকে শিশু আরিয়ান মেলায় এসে শিশু পার্ক দেখে আনন্দে আত্মহারা। ছেলের উচ্ছ্বাস দেখে বাবাও আপ্লুত। শুধু আরিয়ান নয়, বৃহস্পতিবার তীব্র শীত ও ছুটির দিন না থাকায় মেলার স্টলগুলোতে ভিড় না থাকলেও শিশু পার্কে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নাগরদোলা, ম্যাজিক নৌকা, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে ছিল তাদের ভিড়। সব মিলিয়ে জমজমাট পরিবেশ বিরাজ করছিল শিশু পার্কে।
সরেজমিন দেখা যায়, এবার শুরুতে বেশির ভাগ স্টল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। শুরুতে স্টল নির্মাণ শেষ হলেও ছুটির দিন ছাড়া মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতার সমাগম খুব কম হয়। বৃহস্পতিবার মেলার নবম দিনও এর ব্যতিক্রম ছিল না। বিকাল থেকেই দর্শনার্থীরা মেলায় আসতে শুরু করেন। সন্ধ্যার পর মেলায় দর্শনার্থীদের আগমন সবচেয়ে বেশি হয়।
মেলার স্টলগুলোতে হকারদের মতো করে হাঁকডাক করে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করতে দেখে অনেকেই হতাশ হয়েছেন। এ কারণে মেলার স্টলগুলোতে তেমন ভিড় লক্ষ করা যায়নি। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় মেলার মূল ভবনের পেছনে অস্থায়ী পার্কে। মেলার এ অস্থায়ী শিশু পার্কে এবার ১৫টি রাইডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেউ চাইলে ইলেকট্রিক সাম্পানে দোল খেতে পারেন। এই রাইডটির টিকিট মূল্য ১০০ টাকা।
হেলিকপ্টার, ওয়ান্ডারফুল, সুইং চেয়ার, ভূতের বাড়ি, ঘোড়া, মেরি ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতে পারবে। এ রাইডগুলোর সর্বিনম্ন টিকিটের মূল্য ৮০, সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ।
শিশু পার্কে কর্মরত ম্যানেজার লিটন বলেন, আশা করি জানুয়ারির মাঝামাঝি মেলা পুরোদমে জমে উঠবে। কথা হয় ফারুক আহমেদ নামের এক দর্শনার্থীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মেলার তো মাত্র কয়েক দিন হলো। এখন একটু এলোমেলো মনে হচ্ছে। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে কয়েক দিন পর মেলা পুরোদমে শুরু হবে।
এদিকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত অফার লুফে নিতে বাণিজ্যমেলায় যমুনার প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইল লিমিটেডের ম্যানেজার রাজিব সাহা বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা উন্নতমানের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-রাইসকুকার, রেফ্রিজারেশন, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রনিক ওভেন, গ্যাস বার্নার, কারিকুকার, ইনফারেন্সকুকার, রুমহিটার, ভেন্ডর, মিক্সারভেন্ডর ও জুসার। এসব গৃহস্থালি পণ্য আমরা বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছি। এছাড়া যমুনা ইলেকট্রনিক্সের রেফ্রিজারেটর (ডাবল ডোর ও সিঙ্গেল ডোর) বিশেষ মূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
স্মার্ট টিভি ও গুগল টিভিসহ সব পণ্য যমুনার নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে তৈরির কারণে সহজে ও কম দামে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি আমরা।
কালিগঞ্জ উপজেলার সোমবাজার এলাকা থেকে মেলায় আসা গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার বৃষ্টি বলেন, যমুনার গৃহস্থালি পণ্য সবসময়ই কেনা হয়। এগুলো খুবই টেকসই ও মজবুত। তবে বিদেশি পণ্যের দাম নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ও বাণিজ্যমেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, মেলায় প্রতি বছরই শিশু পার্কের ব্যবস্থা রাখা হয়। যাতে শিশুরা মেলায় এসে আনন্দ করতে পারে। নবম দিন পর্যন্ত মেলায় কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। দশম ও একাদশ দিন ছুটির দিন। এদিন মেলায় ভিড় হবে বলে আশা করছি। মেলায় দর্শনার্থীদের কথা চিন্তা করে বিআরটিসির শাটল বাস রাখা হয়েছে।
বিষয় : বাণিজ্যমেলা শিশু পার্ক
সম্পাদক ও প্রকাশক: আনোয়ার হোসেন নবীন
যোগাযোগ: +880244809006
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানা: ২২০/১ (৫ম তলা), বেগম রোকেয়া সরণি, তালতলা, আগারগাঁও, পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা-১২০৭
© 2025 National Tribune All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh